বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা - সত্তরের নির্বাচন এবং মুক্তিযুদ্ধ | NCTB BOOK
602
Summary

১৯৭০ সালের নির্বাচনে সামরিক সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্স ময়দানে বক্তব্য জাতির জন্য একটি দিক নির্দেশনা ছিল, যেখানে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন:

  • চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার;
  • সৈন্যদের ব্যারাকে ফেরত নেওয়া;
  • গণহত্যার তদন্ত করা;
  • নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

বঙ্গবন্ধু দেশবাসীকে সংগঠিত হতে এবং মুক্তির সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানান। তার এই ভাষণ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত হয়, যা মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা দেয়। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা 'Memory of the World International Heritage Register'-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে সামরিক সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অস্থিরতা সৃষ্টি হয় । সারা দেশে নানারকম উদ্বেগ, উত্তেজনার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল জাতির জন্য সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা । পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের সমাবেশে লক্ষ লক্ষ জনতার ঢল নামে । বঙ্গবন্ধু এ সমাবেশে যে ভাষণ দেন তা বিশ্বের ইতিহাসে খ্যাত হয়ে আছে। ২৫ মার্চ আহূত জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের জন্য বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে চারটি দাবী উপস্থাপন করেন। এগুলো হলো:

  • চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার;
  • সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া;
  • গণহত্যার তদন্ত করা এবং
  •  নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

এর বাইরে আরও বেশ কিছু দাবি বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উত্থাপন করা হয়। তিনি বাংলাদেশের সকল অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। ভাষণে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক গ্রাম, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়াবো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।' তিনি মুক্তি সংগ্রামের জন্য সকলকে প্রস্তুত হওয়ার আদেশও দেন এবং দেশকে শত্রুমুক্ত করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান জানান । তাঁর এ ভাষণ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘বজ্রকণ্ঠ' নামে প্রচারিত হয়, যা বাঙালিকে স্বাধীনতা সংগ্রামকে অনুপ্রাণিত করে।

২০১৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ'কে বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা, ইউনেসকো (UNESCO) । ভাষণটি ইউনেসকো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য 'Memory of the World International Heritage Register'-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ পর্যন্ত এসব স্বীকৃতির মধ্যে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকেই প্রথম পাণ্ডুলিপিবিহীন এবং অলিখিত ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ।

Content added || updated By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...